ইমাম খাইর, উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ০৯/০২/২০২৪ ৮:৩৮ পিএম
ফাইল ছবি

বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকায় টানা কয়েকদিন গোলাগুলি, সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ার পথে। বিজিবি মহাপরিচালকের কড়া ঘোষণা ও সীমান্তে সতর্ক অবস্থানের পর থেকে নতুন করে বিজিপির কোন সদস্য বাংলাদেশে ঢুকেনি। ঘুমধুমের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যারা কয়েকদিন আগে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদে চলে গিয়েছিল, বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছিল তারা ফিরতে শুরু করেছে। আতঙ্ক অনেকটা কমে গেছে। উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ঘুমধুম-তুমব্রু, জলপাইতলী সীমান্তের ২৪৩ জন সবাই ঘরে ফিরে গেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সীমান্তের ওপারে কোনো গোলাগুলি, মর্টারশেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়নি। এদিকে, মিয়ানমারে সংঘর্ষ, গোলাগুলির প্রভাবটা স্থল পথে। জলপথে নয়। সে কারণে কক্সবাজার টু সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল অব্যাহত আছে। তবে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল এখনো বন্ধ রয়েছে। এ কারণে অনেক পর্যটক ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন। শুক্রবার বিকালে সেন্টমার্টিন থেকে ফেরা একজন পর্যটকের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে যেতে টিকিট কেটেছিলাম ১০ দিন আগে। হঠাৎ এ পথে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কক্সবাজার থেকে নতুনভাবে টিকিট করতে হয়েছে। যে কারণে আর্থিক এবং সময় উভয় দিক দিয়ে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কক্সবাজার থেকে যে পথ দিয়ে সেন্টমার্টিন গিয়েছি একই পথ দিয়ে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যেতে হয়। সীমান্ত পরিস্থিতির প্রভাব শুধু কি টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটের জন্য? এমন প্রশ্ন ঢাকার শ্যামলী থেকে আসা ওই পর্যটকের। নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের দোকানদার আবুল কালাম বলেন, বান্দরবানের সীমান্তবর্তী উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্তের পরিস্থিতি এখন শান্ত।  মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কয়েকদিন ধরে সামরিক বাহিনী ও বিদ্রোহীদের তীব্র লড়াইয়ের কারণে আতঙ্কে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে গিয়েছিলেন ওই সীমান্তের বাসিন্দারা। তবে পরিস্থিতি আপাতত ‘অনুকূল’ দেখে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা এখন ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে এখনো মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কোনো গোলাগুলির আওয়াজ পাননি স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সারাদিনও কোনো গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি। নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের তুমব্রু-ঘুমধুমের ওপারের তুমব্রু ও ঢেকিবুনিয়া ক্যাম্প দুইটি মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর দখলে চলে যাওয়ায় পরে সেখানে এখন গোলাগুলি বন্ধ হয়েছে। ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা অনেকটা স্বাভাবিক আছে। গোলাগুলির আর তেমন কোনো শব্দ শোনা যায়নি। গত কয়েকদিন ধরে সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির কারণে আতঙ্কে ছিলেন এলাকাবাসী। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় আশ্রয়কেন্দ্র ও আত্মীয়দের বাড়িতে চলে যাওয়া বাসিন্দারা আবার এলাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যসহ ১০০ জনকে কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে টেকনাফের হ্নীলায় নিয়ে গেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। ওপারে চলমান সংঘর্ষ থেকে বাঁচতে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বিজিপির ৩৩০ জন সদস্য।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারে সংঘাত/টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ঢুকল আরও ৯ বিজিপি সদস্য

মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ...